শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫, ০৬:১৯ অপরাহ্ন
কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি:: গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী মো: রুবেল (৪০)কে ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন র্যাব-১০ এর সহকারি পরিচালক (অপ্স ও মিডিয়া) এএসপি এম. জে. সোহেল।
তিনি বলেন, দেশব্যাপী সহিংসতা ও সরকার পতনের উদ্ভূত সংকটপূর্ণ পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে গত ৬ আগস্ট সকাল পৌনে ৯টার দিকে কোনাবাড়ী থানার দেওলিয়াবাড়ি সাকিনস্থ কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার এর ভিতরে থাকা কারাবন্দিরা মিলে পরস্পর যোগসাজশে মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দাঙ্গা হাঙ্গামা শুরু করে এবং কারাগারের ভিতরে কর্তব্যরত কারারক্ষীদের মারধর ও জিম্মি করে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় বন্দিরা শতাব্দি ভবনের লকআপ গেইট ভাংচুর করে বের হয়ে ভবনের সিঁড়িতে লাগানো লোহার এঙ্গেল খুলে আক্রমনের হাতিয়ার তৈরি করে এবং অন্যান্য কারাবন্দিরা ভবনের লকআপ গেইট ভেঙ্গে ফেলে। এ সকল ভবনের কারাবন্দিরা ভবন থেকে বের হয়ে একত্রিত হয়ে ভাংচুর দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও অগ্নিসংযোগ শুরু করে। ঘটনার এক পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য কারারক্ষীরা এলার্ম বাজায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ না আসলে অফ ডিউটিতে থাকা কারারক্ষীগণ কারা অভ্যন্তরে প্রবেশ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। কারাবন্দিদের আক্রমনে প্রায় ২৫ জন কারারক্ষী আহত হন। এমতাবস্থায় দাঙ্গা-হাঙ্গামা চলাকালে কারাবন্দিরা বৈদ্যুতিক পিলার ভেঙ্গে মই বানিয়ে দুপুর ২টার দিকে বাউন্ডারির উপর দিয়ে কারাগারের পশ্চিম দিক দিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় কারা কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে গাজীপুর জেলার কোনাবাড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
তিনি আরও বলেন, ঘটনাটি জানতে পেরে র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল জেল পলাতক কারাবন্দিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। ৮ সেপ্টেম্বর সন্ধায় র্যাব-১০ এর উক্ত আভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এবং র্যাব-৮ এর সহযোগীতায় ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন চর কালীগঞ্জ তৈলঘাট এলাকায় একটি যৌথ অভিযান পরিচালনা করে জেল পলাতক মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী মো: রুবেলকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকৃত আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালে রাজধানী ঢাকার সূত্রাপুর থানাধীন আজাদ সিনেমা হলের সামনে মোবাইল চুরির বিষয়কে কেন্দ্র করে গ্রেফতারকৃত রুবেলসহ তিনজন মিলে ভিকটিমকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরবর্তীতে এ বিষয়ে সূত্রাপুর থানায় রুবেলসহ তিন জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা রুজু হয়। উক্ত মামলার বিচার কার্য শেষে বিজ্ঞ আদালত ২০১৪ সালে রুবেলসহ তিনজনকে মৃত্যুদন্ডের সাজা প্রদান করেন। তিনজনের মধ্যে একজন কারাগার থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। একজন এখনও কারাগারে আছেন।